Banner

"হস্তমৈথন: হারাম না হালাল? ইসলামী দৃষ্টিকোণ ও মতামত" ?

আসসামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আল্লাহ্‌র অশেষ কৃপায় সবাই ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ্‌। তবে লিখাটি শেষ পর্যন্ত পয়রার অনুরোধ করলাম।কারণ শেষ পর্যন্ত না পড়লে আপনি মূল কারণটি জানতে পারবেন না।


ছোটবেলা থেকে আমরা শুনে এসেছি যে হস্তমৈথুন হারাম এবং মারাত্মক গুনাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু বর্তমানে, কিছু ব্যক্তি দাবি করছেন যে এটি হারাম নয় এবং এর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো হাদিসও নেই। এই বিষয়ে মন্তব্য করে ডা. জাকির নায়েক বলেন, “হস্তমৈথুন হারাম বলার পক্ষে কুরআন ও হাদিসে কোনো স্পষ্ট দলিল নেই। আমি একে হারাম বলতে পারি না।” এতে করে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন।




প্রথমে, আপনি যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তা একটি জটিল এবং বিতর্কিত বিষয়। হস্তমৈথুনের ব্যাপারে ইসলামী স্কলারদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে, এবং এর সম্পর্কে কিছু প্রমাণাদি ও মতামত বিশ্লেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

ড. জাকির নায়েক বলেন যে, কুরআন ও হাদিসে হস্তমৈথুনকে সরাসরি হারাম বলা হয়নি এবং বিভিন্ন আলেমের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। তার মতে, যেহেতু হস্তমৈথুনের ওপর কোনো স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা নেই, তাই এটি মুবাহ (অনুমোদিত) হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

অন্যদিকে, হস্তমৈথুনের বিরুদ্ধে যারা মতামত দেন, তারা কুরআন ও হাদিসের কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্ধৃতি দিয়ে এটিকে হারাম বা অপছন্দনীয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ:

  1. হাদিসের উদ্ধৃতি:

    • হযরত জাবির (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "কত নিকৃষ্ট ঐ ব্যক্তি, যে হাতের সাথে হস্তমৈথুন করে।" (আল-হাদিস)
    • আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হস্তমৈথুনের বিষয়টি নিয়ে একটি যুবকের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন যে, বাঁদীর সাথে বিয়ে করে নেয়া শ্রেয়।
  2. কুরআনের আয়াত:

    • সূরা মুমিনুন (আয়াত ৫-৭) উল্লেখ করে যে, কেবল স্ত্রীর বা মালিকানাধীন দাসীর সাথে যৌন সম্পর্ক বৈধ, অন্যথায় তা সীমালঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে। এখানে হস্তমৈথুনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  3. স্কলারদের মতামত:

    • ইবনে হাযম এবং অন্যান্য কিছু স্কলার বলেছেন যে, কুরআন এবং হাদিসে হস্তমৈথুনের নিষেধাজ্ঞা নেই, এবং এটি মুবাহ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
    • অন্যদিকে, কিছু স্কলার এটিকে মাকরুহ (অপছন্দনীয়) বা হারাম মনে করেন, বিশেষত যদি এটি অনৈতিক আচরণের দিকে পরিচালিত করে।

সার্বিকভাবে, হস্তমৈথুনের ব্যাপারে বিভিন্ন মতামত রয়েছে এবং ইসলামী স্কলারদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। কিছু স্কলার এটিকে মুবাহ (অনুমোদিত) হিসেবে বিবেচনা করেন, আবার কিছু এটিকে অপছন্দনীয় বা হারাম মনে করেন। মুসলিমরা সাধারণত যে মতামত অনুসরণ করেন তা তাদের ব্যক্তিগত বিশ্বাস, ধর্মীয় শিক্ষা, এবং স্কলারদের পরামর্শের ওপর নির্ভর করে।

আপনার উল্লেখিত বিষয়টি নিয়ে ইসলামি গবেষণা এবং ফতওয়া কমিটির সাথে আলোচনা করা সবচেয়ে সঠিক পদ্ধতি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ