আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। কেমন আছেন বন্ধুরা আশা করছি আল্লাহ্র অশেষ মেহের বানীতে আপনারা সবাই ভালো আছেন।
বন্ধুরা এই পোষ্টটি খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ তাই শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
রাস্তাঘাটে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য ইসলাম নারীদের হাইহিল পরার বিষয়টি সমর্থন করে না, কারণ ইসলাম আমাদের সাধারণভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে আমরা বিপজ্জনক বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকি।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নিজদেরকে ধ্বংসে নিপতিত করো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৯৫)
হাই হিল জুতা পরা বিভিন্ন কারণে নিষিদ্ধ:
(১) নিজেকে লম্বা দেখাবার উদ্দেশ্যে এই জুতা পরার মানে হল, আল্লাহর সৃষ্টি আকৃতির ব্যাপারে অসন্তুষ্টি প্রকাশ।
(২) লম্বা ও উঁচু দেখানোর উদ্দেশ্যে পরলে লোককে ধোকা দেওয়া হয়।
(৩) এই জুতা পরলে মহিলাদের পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। যদি জনসমক্ষে পড়েন, তবে তার ওপর হাততালি ও তামাশার ঝড় উঠে। আর যদি কোনো বিপদজনক বা অস্বস্তিকর জায়গায় পড়েন, তবে তা শারীরিক ক্ষতি বা অনাবৃত হওয়ার কারণ হতে পারে।
(৪) এই জুতা পরলে একটি আকর্ষণীয় আওয়াজ তৈরি হয় এবং চলাফেরায় একটি বিশেষ ধরনের মনোমুগ্ধকর ও অভিনব দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়, যা পুরুষদের দৃষ্টি ও মনকে আকর্ষণ ও প্রলুব্ধ করে।
(৫) এই জুতা পড়লে পশ্চিমা নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হয়।
(৬) এই জুতা পড়লে মনে মনে গর্ব ও অহংকারের সৃষ্টি হতে পারে।
(৭) এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই জুতা পরলে স্বাস্থ্যগত অনেক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, এটি পিঠে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে, পায়ের রোলার পেশী শক্ত হয়ে যেতে পারে, ইত্যাদি।
এটা তো দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার যে, হাই-হিল পরার কারণে একজন নারীকে বাস্তবের তুলনায় অধিক দীর্ঘকায় দেখায় এবং তাদের অন্যতম লজ্জাস্থান নিতম্ব মানুষের চোখে অধিক দৃশ্যমান হয়ে ধরা পড়ে ।
অবশ্যই এটা এক ধরনের প্রতারণা। একই সাথে হাই-হিল পরার কারণে নারীর এমন সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়ে পড়ে, যা ইসলাম তাকে ঢেকে রাখতে বলেছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ আর আপনি মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেনো তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে। আর যা স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ পেয়ে থাকে, তা ছাড়া তারা যেনো তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।
তারা যেনো তাদের ওড়না দিয়ে তাদের বক্ষদেশ ঢেকে রাখে। তারা যেনো তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ক্রীতদাস, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো সামনে নিজেদের সৌন্দর্য উন্মুক্ত করে না দেয়।
আর তারা যেনো আপন সৌন্দর্য প্রকাশের তাড়নায় সজোরে পদচারণা না করে। (সুরা নূর, আয়াত ৩১)।
এছাড়া হাই-হিলের কারণে নারীরা সামনের দিকে অনেকখানি ঝুঁকে থাকে। এর কারণে তাকে হেলেদুলে প্রলোভন জাগানো ভঙ্গিতে চলাফেরা করতে হয়।
এই শ্রেণীর দৃষ্টি ও মন আকর্ষনীয় জুতা পরে যে মহিলা প্রদর্শন করে বেড়ায়, সে আসলে ঐ মহিলাদের দলভুক্ত হতে পারে, যাদের সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘‘—
এরা (পর পুরুষকে নিজের প্রতি) আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও (তার প্রতি) আকৃষ্ট হবে; তাদের মাথা হবে হেলে যাওয়া উটের কুজের মত।
তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জান্নাতের সুগন্ধও অনুভব করতে পারবে না, যদিও সেই সুগন্ধ এতটাই দূর থেকে পাওয়া যাবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের বক্তব্য অনুসারেও হাই-হিল নারীর পিঠের ক্ষতি সাধন করে। তাছাড়া হাই-হিল থেকে একপ্রকার টক-টক আওয়াজ উচ্চকিত হয় যা পুরুষকে আকৃষ্ট করে।
অতএব, এমন ক্ষতিকর ও অপ্রীতিকর পোশাক নারীদের জন্য কখনও শালীন হতে পারে না, এবং ইসলামও এর সমর্থন করে না।
(ফতোয়া লাজনাতুদ দায়িমাহ, ৯/৪৬)
ইলা রাববাতিল খুদূর, আবু আনাস আলী ৮৬পৃঃ
মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২১২৮
গ্রন্থঃ ইসলামী জীবন-ধারা
অতএব ঐ নারীদের সতর্ক করা হল যারা এই ধরণের হাই হিল জুতা পরে থাকেন। আশা করি এর পর থেকে আর হাই হিল জুতা পরবেন না। যদি জান্নাতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে। ধন্যবাদ সবাই কে।লাম।
0 মন্তব্যসমূহ