বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে ফেসবুক অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই সামাজিক নেটওয়ার্কটি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৪৫ কোটি।
ধারণা করা হচ্ছে এই শতাব্দির পর ফেসবুকের জীবিত ব্যবহারকারীর চেয়ে মৃত মানুষের প্রোফাইল থাকবে বেশি।প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী মারা যাচ্ছেন, যার ফলে ফেসবুক ক্রমশ বিশ্বের বৃহত্তম ভার্চুয়াল কবরস্থানে পরিণত হতে যাচ্ছে।
বর্তমানে, ১৫০ কোটি মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ, ১০০ কোটি ইনস্টাগ্রাম, এবং ৩৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ টুইটার ব্যবহার করছেন। ফেসবুকের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মত, ভবিষ্যতে এটি মৃত ব্যক্তিদের ডিজিটাল আর্কাইভ বা ডিজিটাল কবরস্থান হিসেবে পরিচিত হতে পারে, যেখানে ব্যবহারকারীর মৃত্যুর পরেও সব তথ্য জীবিত থাকে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা অনুযায়ী, যদি ফেসবুকের বর্তমান প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে ২১০০ সালের মধ্যে ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৫০০ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে। বর্তমানে দৈনিক ৮ হাজার ব্যবহারকারীর মৃত্যু হচ্ছে। এমনকি ফেসবুক ব্যবহারের হার কমলেও, আগামী ৮০ বছরে ফেসবুক আইডিধারীদের মধ্যে প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে। ২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর মৃত্যু ঘটেছে।
এখন প্রশ্ন হলো, মৃত ব্যক্তির ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও এবং বিশেষ মুহূর্তের শেয়ার করা ছবিগুলো পরিবারের সদস্যদের কাছে কিভাবে পৌঁছে দেওয়া যাবে?
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ পাভেন ডাগেল বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত ইমেইল আইডি এবং সামাজিক অ্যাকাউন্ট রেখে মারা যান, তবে তার উত্তরাধিকারী চাইলে সেই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারেন।
ফেসবুকও ব্যবহারকারীদের একটি উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করতে বলে, যাতে মৃত্যুর পর সেই ব্যক্তি অ্যাকাউন্টের তথ্য ও স্মৃতি অ্যাক্সেস করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: দ্যা ইকোনমিক টাইমস এবং প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট ম্যাশেবল।
প্রতিবেদন: ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মৃত্যুর সংখ্যা – বাস্তবতা ও প্রমাণ
পূর্বকথা:
সম্প্রতি একটি উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এসেছে যে প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী মারা যাচ্ছে। এটি ফেসবুককে বিশ্বের বৃহত্তম ভার্চুয়াল কবরস্থানে পরিণত করার হুমকি দেয়। এই প্রতিবেদনটি এই দাবির সত্যতা যাচাই এবং এর প্রমাণ উপস্থাপন করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।
তথ্য বিশ্লেষণ:
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মৃত্যু সংখ্যা:
এই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করার জন্য আমরা বিভিন্ন উৎসের তথ্য পর্যালোচনা করেছি। ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা ও প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা: অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে যে, যদি ফেসবুকের বর্তমান প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে ২১০০ সালের মধ্যে ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৫০০ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে। যদিও এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস, এটি দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৮ হাজার হিসেবে গণনা করা যেতে পারে।
ইন্টারনেটের নতুন পরিসংখ্যান: কিছু সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মৃতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, ফেসবুকের মৃত্যুর পরবর্তী ব্যবস্থাপনা এবং উত্তরাধিকারীর দায়িত্বও বিষয়টি আরো জটিল করে তুলছে।
ফেসবুকের প্রেক্ষাপট:
- ডিজিটাল আর্কাইভ: ফেসবুকের ডিজিটাল আর্কাইভিং ব্যবস্থা এটি নিশ্চিত করে যে, মৃত ব্যবহারকারীদের তথ্য এবং স্মৃতি অ্যাক্সেসযোগ্য থাকে। মৃত ব্যক্তির ডিজিটাল কন্টেন্টের হালনাগাদ ব্যবস্থাপনা এবং উত্তরাধিকারী নিয়োগের মাধ্যমে এই সমস্যার মোকাবেলা করা হয়।
প্রমাণ ও উৎস:
ম্যাশেবল এবং দ্যা ইকোনমিক টাইমস: এই সাইটগুলি ফেসবুকের ভবিষ্যৎ এবং ব্যবহারকারীদের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করেছে। তারা উল্লেখ করেছে যে, ফেসবুকের তথ্যের ভিত্তিতে এই ধরনের পূর্বাভাস তৈরি করা হচ্ছে।
গবেষণার ফলাফল: বিভিন্ন গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে, বর্তমান প্রবৃদ্ধির ভিত্তিতে, ফেসবুকের মৃত্যুর হার নির্ধারণ করা সম্ভব।
উপসংহার:
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মৃত্যু সংখ্যা নিয়ে ৮ হাজার দৈনিক মৃত্যু দাবি করা হচ্ছে, যা বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে সত্য হতে পারে। এটি একটি গম্ভীর বিষয় যা ফেসবুকের ডিজিটাল আর্কাইভ এবং উত্তরাধিকারী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে।
ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের মৃত্যুর সংখ্যা এবং ডিজিটাল স্মৃতি পরিচালনার এই প্রক্রিয়া আমাদের ডিজিটাল জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আরও চিন্তা করতে বাধ্য করছে।
0 মন্তব্যসমূহ